পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক
তার নর।
নজরুলের
এই বাণীতে নারী অর্ধেক অবস্থানে থাকলেও আসলে নারী আরও অনেক বেশি দায়িত্ব পালন করে থাকে।
বাইরের কাজের সাথে সাথে সাংসারিক দিকটিও সামলাতে হয়। সন্তান লালন-পালন, লেখাপড়া, বাজার
ঘাট এগুলোও আজকাল নারীকেই করতে হচ্ছে। এতসব দায়িত্ব পালনে নারী কতটুকু সুস্থ? প্রয়োজন
নারীর সুস্বাস্থ্য।
একজন
পরিশ্রমী নারী তার পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে যেভাবে যত্ন নেন, সে ক্ষেত্রে নিজের প্রতি
অনেক উদাসীন।
এই
উদাসীনতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অপুষ্টি বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এই
পুস্তিকাতে নারীর স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন পর্যায়ে—কোন পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন, কীভাবে পুষ্টি
পাওয়া যেতে পারে সেসব বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
যাতে
একজন নারী তার বিভিন্ন পর্যায়ে সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘদিন নিজেকে নিরোগ
ও সুস্থ রাখতে পারেন।
—ডায়েট
কাউন্সেলিং সেন্টার
সাধারণ
অবস্থায় প্রতিটি মানুষের জীবনের কয়েকটি পর্যায় রয়েছে।
যেমন
: নবজাতক
(জন্মের
পর থেকে ২য় সপ্তাহ)
শৈশব কাল
প্রাক
শৈশব (২ সপ্তাহ-২ বছর)
প্রাথমিক
শৈশব (২-৬ বছর)
বাল্যকাল
(৬-১০ বছর)
কৈশোর কাল
(১০-১৯
বছর)
প্রারম্ভিক
বয়ঃসন্ধিক্ষণ (১৩-১৬ বছর)
মধ্য
বয়ঃসন্ধিক্ষণ (১৩-১৬ বছর)
বিলম্বিত
বয়ঃসন্ধিক্ষণ (১৭-১৯ বছর)
যৌবন কাল
তারুণ্য
(১৮-২৫ বছর)
প্রাপ্ত
বয়স্ক (২৫-৪০ বছর)
প্রৌঢ়
(৪০-৬০ বছর)
বার্ধক্য
(৬০ বছরের উপরে)
তবে
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যময় পরিবর্তন নারীর মধ্যে লক্ষণীয়। শুধু এক জীবনেই নারীকে
সাধারণ অবস্থা দেখা যায় ৩টি ধাপে, যেমন : কন্যা, জায়া, জননী। এই পর্যায়গুলো সম্পূর্ণই
বাহ্যিক এবং সামাজিক বৈশিষ্ট্যের অংশ। দৈহিক এবং অভ্যন্তরীণ দিক থেকেও নারীর পরিবর্তন
একজন পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি। যেমন : শিশু, কিশোরী (যে সময় মেয়েরা ঋতুবতী হয়), স্ত্রী
হিসেবে নারী, সন্তানসম্ভবা নারী বা গর্ভবতী মা, দুগ্ধবতী নারী বা স্তন্যদানকারী মা,
মেনোপোজ (যে সময় নারীর ঋতু বন্ধ হয়ে যায়) এ ধাপগুলো বিশেষভাবে লক্ষণীয়। নারীর জীবন
ও দেহে এতো পরিবর্তনের জন্য তাদের আলাদা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতার প্রয়োজন। নারীর
প্রতিটি অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের জন্যই স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতা ভিন্ন হয়ে থাকে।