‘লন ভাই আপনের চা।
এক্কেবারে একশ একশ গরম চা। এতো গরম চা আর কোথাও পাইবেন না।’ কথাগুলো বলেই চুলার দিকে দৌড় দেয় আলীম। চুলার জ্বালটা একটু ঠেলে
দেয়। বেশি জ্বাল পেয়ে দুধ উতলে ওঠে। এমন সময় হোটেলের কলিং বেল বেজে ওঠে। ক্যাশ
বাকসের পাশে বসে বেল বাজায় হোটেলের মালিক ফকির আলী। বেলের শব্দ শুনে আলীম দৌড় দেয়।
ফকির আলীর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ‘কী চাচা’। আলীম বলে, ‘কাস্টমার
আইচে। ভালো কইরা চারটা পরটা আর চারটা ডিম ভাজতে বল’। ফকির আলীর
এই কথা শুনে আলীম মাথা নাড়ে। ঘাড় ঘুরিয়ে ডান দিকে তাকায়। গোলগোল চেহারায় দুজন পাক
আর্মী বসে আছে। ইয়া লম্বা। বড় বড় চোখ। পাকানো গোঁফ। গায়ে খাকি রঙের পোশাক। মাথায়
হেলমেট। পায়ে বুট জুতা। কাঁধে রাইফেল। আলীম আর দাঁড়ায় না। তাদের জন্য নাস্তা আনতে
যায়।
সোনাডাঙা এলাকায় ফকিরের হোটেলের নাস্তাই সেরা। এজন্য এই হোটেলে সব সময় ভিড় লেগে থাকে। এখন ভিড়টা আরও বেড়ে গেছে। কারণ তার দোকানের রেডিওতে সবাই মুক্তিযুদ্ধের খবর শুনতে এসেছে। ইদানিং বসন্তপুর আর্মী ক্যাম্প থেকে পাক সেনারাও এই হোটেলে নাস্তা খেতে আসে। দল বেঁধে পাক সেনাদের আসতে দেখে ভয় পায় ফকির আলী। হোটেলে বসে থাকা লোকজন তাদের দেখে ভয়ে বেরিয়ে যায়। ফকির আলী একটু নড়েচড়ে বসে। রেডিওটা বন্ধ করে টেবিলের নিচে রাখে। হোটেলে ঢুকে পাকসেনারা নাস্তা খায়। টেবিল ভরে নাস্তা দেয় আলীম। পাক সেনারা গপাগপ খেতে থাকে। চা নাস্তা খেয়ে সেনারা খুব খুশি হয়ে আলীমকে ডেকে বকশিস দেয়। একজন সেনা বলে, এ আলীম তুম হামারা সাথ ক্যাম্প মে যায়ে গা? হামারা সাথ থাকে গা? এই কথা শুনে আলীম কিছু বলে না। মালিক ফকির আলীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
“ ” - Md rakibul Islam Robin